চীনে গত ডিসেম্বরেই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। মার্চের ৮ তারিখ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তবে শুরু থেকেই সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে বলে দাবি করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
তবে বাস্তবতা হলো এপ্রিল মাসেওস্বাস্থ্যকর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও সুশৃঙ্খল চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশে।
করোনা চিকিৎসায় নির্ধারিত কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালেই নেই পর্যাপ্ত এন-৯৫ মাস্ক। হাসপাতালের আইসিইউ চলছে জোড়াতালিতে।
চিকিৎসা শেষে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নেই আবাসন ও খাবার দাবারের নিশ্চয়তা। শুধু তাই না, অবকাঠামো তৈরিতে সরকারি অন্য বিভাগ থেকেও সহায়তা পাচ্ছেন না চিকিৎসকরা।
কোভিড-১৯ চিকিৎসার বেহাল দশা অন্য হাসপাতালগুলোতেও। এখনো নেই চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত এন-৯৫ মাস্ক।
সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে একের পর এক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনায় আক্রান্তের খবর আসে।
উন্নত দেশগুলতেও এমন ঘটনা ঘটে। তবে সে তুলনায় বাংলাদেশে এর হার অনেক বেশি।
রোগী শনাক্তের পর প্রায় দেড় মাসেও চিকিৎসার এই বেহাল দশার সমালোচনা বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন পরিকল্পিত কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
রোগীর সেবা দিতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত ডা. মঈন উদ্দিনের মৃত্যু ও সারাদেশে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের করোনা শনাক্তের পর চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি আরও বেশি আলোচিত হচ্ছে।
এক চিকিৎসক জানান, চিকিৎসা শেষে পরিবারের নিরাপত্তার খাতিরে বাসায় ফিরতে পারছেন না।সরকারি গেস্ট হাউসেও জায়গা হয়নি তাদের।
অবশেষে বেসরকারি দুটি হোটেলে আবাসনের ব্যবস্থা হলেও খাবার সংকট কাটেনি। স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকবেন শুনেই পালিয়ে যায় হোটেলের বাবুর্চি।
পরে আরেকজনের মাধ্যমে একটি হোটেলে খাবারের ব্যবস্থা হয়েছে। তবে অন্য হোটেলের সংকট কাটেনি।
কুয়েত মৈত্রীর অপর একজন চিকিৎসক আক্ষেপ করে বলেন, সারাদিন কাজ করার পর আমার স্টাফরা যদি ঠিক মতো খেতেও না পারে তবে কীভাবে তারা সেবা করবে বলেন।
অনেক বলাবলি ও তদবিরের পর কিছু পিপিই পাওয়া গেছে। তবে এন-৯৫ মাস্ক নেই বললেই চলে।
চিকিৎসা ব্যবস্থার এমন পরিস্থিতিতে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কড়া সমালোচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বলেন, সমস্যা বিশ্বব্যাপী।
তবে প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাওয়ার পরও এতটা খারাপ পরিস্থিতি দুর্ভাগ্যজনক। এখানে সমন্বয়ের বড় ঘাটতি আছে।
রোগী শনাক্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম বাংলাদেশে। তবে পরীক্ষা বাড়ানো হলে এই সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বেশি হবে বলে মনে করেন কেউ কেউ।
এ অবস্থায় চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি করতে না পারলে ভায়াবহ সংকটের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্র WHO তে অর্থায়ন বন্ধ করবে-ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। বিস্তারিত